ঢাকা,শনিবার, ৪ মে ২০২৪

সেতু নির্মাণ বছরেও শেষ হয়নি, চরম দুর্ভোগে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ

সেতুচকরিয়া প্রতিনিধি ::
চকরিয়া উপজেলার হারবাং খালের উপর ২টি সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার মেয়াদকাল নয় মাস আগে অতিবাহিত হলেও এখনো ওই দুটি সেতুর নির্মাণ সুচনা লগ্নেই রয়ে গেছে। এক বছর পূর্বে গ্রাউন্ড লেভেলে শুরু করা কাজ এখনো সেই শুরুতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। ফলে হারবাং খালের দু’পাড়ের ৮টি গ্রামের মানুষ জীবণ ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে বাঁশের সাঁকো দিয়ে। এতে ওই এলাকার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চাষিদেরও চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চকরিয়ার হারবাং একটি ঐতিহ্যবাহী এলাকা। এখানে হিন্দু ও মুসলমানদের পাশপাশি রয়েছে রাখাইন সম্প্রদায়। সব মিলে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। রয়েছে স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, বিহার, হাসপাতাল, ব্যাংক বীমাসহ বেশ কিছু প্রতিষ্টান। সে সাথে বড় ২টি বাজার রয়েছে। এ এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র সড়কের ২টি সেতু নড়বড়ে হয়ে যাওয়ায় গত বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে সেতু ২টি ভেঙ্গে নতুন সেতু নির্মানের জন্য টেন্ডার আহবান করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।

জানা গেছে, ১কোটি ৯০ লাখ টাকার এ ২টি সেতু নির্মানের কাজ পায় আসলাম এন্ড কোম্পানী নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্টান। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এর তথ্য মতে ঠিকাদারের সাথে কাজের চুক্তি হয় গত বছরের ৯ মার্চ। কাজ শেষ করার সময় ছিল ওই বছরেরই ১৬ জুলাই। কিন্তু ঠিকদারী প্রতিষ্টান নানা কারনে কাজে বিলম্ব করে। তবে কয়েক বার নকশা পরিবর্তনের কারণে যথা সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি বলে দাবী ঠিকদারের।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদারের গাফেলাতির কারনেই সেতু নির্মাণে বিলম্ব হচ্ছে, শেষ হচ্ছেনা তাদের দুর্ভোগ। গত ১৩ মাস ধরে খোলা রয়েছে সেতু ২টি। যার কারণে চলাচলে সীমাহীন কষ্ট হচ্ছে। যেভাবে কাজ চলছে তাতে কখন ব্রীজ দুটি নির্মাণ কাজ শেষ হবে তা নিশ্চিত করে কেউই বলতে পারছেননা।

স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতা মোসলেহ উদ্দিন কবি বলেন, সেতু দুটি ভেঙ্গে ফেলার পর বিকল্প কোন সেতু পর্যন্ত করেনি ঠিকাদার। পরে এলাকাবাসী নিজেদের অর্থে বাশেঁর সাঁকো তৈরি করে। সেতুর কারনে ২টি বড় বাজার এখন বন্ধ হওয়ার পথে। এমনকি চাষিরা তাদের উৎপাদিত ফসল ঠিক সময়ে বাজারে নিতে পারছেনা।

হারবাং উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র আজমাইল ইফতিদার মহীয়ান বলেন, আমাদের প্রতিদিন বাঁশের তৈরী সাঁকো পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। সাঁকোটি পারাপারের সময় অনেক ভয় লাগে।

ঠিকাদার আসলাম চৌধুরী বলেন, বেশ কয়েকবার ডিজাইন পরিবর্তন করার কারণে কাজ যথা সময়ে শুরু করতে পারিনি। কাজের সমস্ত মালামাল স্টক রয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবো বলে আশা করছি।

চকরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী রনি সাহা বলেন, এখন খুব দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। যদি বৃষ্টি না হয় আগামী জুনের মধ্যে সেতু দুটি চলাচল উপযোগী করে তোলা সম্ভব হবে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী এএসএম শাহেদুর রহিম বলেন, গত ফেব্রুয়ারী মাসে আমি যোগদান করেছি। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে মিটিং করেছি। কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আশা করছি চলতি বছরের জুনের মধ্যে সেতু দুটি নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

পাঠকের মতামত: